নীল, সবুজ এবং স্বচ্ছ পানি দেখে মনে হতেই পারে এইটা নিউজিল্যান্ড অথবা সুইজারল্যান্ড কিংবা ক্যানাডা। ভারতের চেরাপুঞ্জি ঝর্না থেকে জেগে উঠা এই লেকের নাম লালাখাল।লালাখালের অবস্থান সিলেট শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দুরে জৈন্তাপুর
উপজেলায়।
লালাখাল
যে
নদির
সাথে
মিলেছে
তাঁর
নাম
সারি
নদী।এই খালের
সবচেয়ে
আকর্ষণীয়
যে
বিষয়
তা
হচ্ছে
বিভিন্ন
কালারের
পানি।
খালের
একেক
অংশে
একেক
ধরনের
কালার।
যেমন
নীল,
সবুজ
ও
স্বচ্ছ
পানি।এই
ভ্রমনে
একসাথে
দেখা
মিলবে
পাহাড়,
ঘন
সবুজ
বন,
নদী,
চা-বাগান
ও
নানা
জাতের
বৃক্ষ।
ঢাকা থেকে সিলেট : ঢাকার গাবতলী এবং সায়েদাবাদ এবং উত্তরা বাস টার্মিনাল থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে বেশ কিছু বাস ছেড়ে যায়৷ থেকে গ্রীন লাইন, সৌদিয়া, এস আলম, শ্যামলি ও এনা পরিবহন ইত্যাদি । এসি বাস এর ভাড়া ৯০০ থেকে ১৫০০ টাকা। নন এসি বাস জনপ্রতি ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা ।
ঢাকা কমলাপুর কিংবা বিমান বন্দর রেলওয়ে স্টেশান হতে উপবন, জয়ন্তিকা, পারাবত অথবা কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনে করে সিলেট যেতে পারবেন।
চট্টগ্রাম থেকে সিলেট : চট্টগ্রাম থেকে বাস, ট্রেন এবং আকাশপথে সিলেট যাওয়া যায়। চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে করে সিলেট যেতে পাহাড়িকা এবং উদয়ন এক্সপ্রেস নামের দুটি ট্রেন সপ্তাহে মোট ৬ দিন চলাচল করে।
সিলেট থেকে লালাখাল : সিলেট থেকে লালাখালে যেতে হলে নগরীর আম্বরখানা বাস স্ট্যান্ড অথবা ধোপাদিধীর ওসমানী শিশু উদ্যানের বা শিশু পার্কের সামনে থেকে লেগুনা, মাইক্রবাস অথবা জাফলংগামী বাসে চড়ে সারিঘাট আসতে পারেন। আপনারা চাইলে জাফলং,ডিবির হাওর, লালাখাল একসাথে ঘুরার জন্য সি এন জি রিজার্ভ করে নিতে পারেন ভাড়া নিবে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা।
সারিঘাট সিলেট এবং জাফলং এর মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। সারিঘাট থেকে লালাখালে যাওয়ার সিএনজিচালিত অটোরিকশা পাবেন। যদি নদীপথে লালাখালে যেতে চান তবে এখানে ইঞ্জিন চালিত বিভিন্ন ট্রলার ও নৌকা ভাড়ায় পাবেন।
একটা কথা মাথায় রাখবেন লালাখাল থেকে সিলেট ফিরতে শেষ রাত ৮ টা পর্যন্ত বাস ও লেগুনা পাবেন।
মাইক্রোবাসে যেতে সিলেট (Sylhet) থেকে লালাখাল যেতে ভাড়া লাগবে ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা। ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বাস কিংবা লেগুনায় সারিঘাট যেতে পারবেন। সারিঘাট থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় লালাখালে যেতে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা ও স্পিডবোটে যেতে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা লাগবে। যদি কম খরচে লালাখাল যেতে চান তাহলে সারিঘাট ব্রিজ পার হয়ে উত্তর দিকে মসজিদ থেকে একটুখানি এগিয়ে ডান দিকে লালাখালের রাস্তায় সারি সারি অটো দাঁড়িয়ে থাকতে দেখবেন। লোকাল অটোতে জনপ্রতি ভাড়া লাগে ১৫ টাকা। অটো থেকে নেমে লালাখাল ঘাটে গেলেই সবুজ পানির অপার্থিব দৃশ্য দেখতে পারবেন।
এখানে বেশ করেক ধরনের নৌকা আছে । ছাউনি দেয়া রঙিন নৌকায় ঘুরতে চাইলে ভাড়া লাগবে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা লাগবে । এক নৌকায় ১২-১৫ জন অনায়াসে উঠা যায়। আর আরো কম টাকায় ঘুরতে চাইলে ছাউনি ছাড়া নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়।
লালাখাল যাওয়ার উপযুক্ত সময় শীতকাল। এই পানি শীতকালে এতই পরিষ্কার থাকে যে অনায়াসেই এর নিচে বহুদূর পর্যন্ত দেখা যায়। টলটলে এই পানিতে মন ভরে গোসলও করা সম্ভব। লালাখালের পানিতে গোসল করার লোভ সামলানো খুবই কঠিন ।
লালাখাল শুরু হয়ে সিলেট-জাফলং সড়কের ‘সারিঘাট’ থেকে। এই খালের শেষ মাথায় রয়েছে বাংলাদেশের সীমানার শেষ চা-বাগান, যার নাম ম্যাগনোলিয়া টি-গার্ডেন।
কোথায় থাকবেন
লালাখালের পাড়ে রাত কাটাতে নর্দার্ন রিসোর্টে বুকিং দিতে পারেন। অতিথিদের সিলেট যাওয়া আসার জন্য এদের নিজেদের পরিবহন ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া লালাখালের কাছে খাদিমনগরে অবস্থিত নাজিমগড় রিসোর্টে আগেই যোগাযোগ করে নিতে পারেন। কারণ সিজনে রিসোর্টের সব রুম বুক থাকতে পারে। নাজিমগড় রিসোর্টে টেরেস, ছোট বাংলো এবং বড় ভিলায় রাত্রি যাপনের সুযোগ রয়েছে। এই রিসোর্টটি আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় ভরপুর। প্রতি রাতের জন্য নাজিমগড় রিসোর্টের প্রিমিয়ার কক্ষের ভাড়া ৭০০০ টাকা এবং প্রেসিডেন্সিয়াল
স্যুইটের ভাড়া ১৫,০০০ টাকা।
তবে থাকার জন্য সিলেট ফিরে আসাই সুবিধাজনক। সিলেটের লালা বাজার ও দরগা রোডে কম ভাড়ায় অনেক মানসম্মত রেস্ট হাউস আছে৷ যেখানে ৪০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিভিন্ন ধরণের রুম পাবেন। এছাড়াও হোটেল হিল টাউন, গুলশান, দরগা গেইট, সুরমা, কায়কোবাদ ইত্যাদি হোটেলে আপনার প্রয়োজন ও সামর্থ অনুযায়ী থাকতে
ভাড়া করতে খেয়া পার হয়ে নদীর অপর পাড়ে ছাউনি ছাড়া নৌকা গুলোর কাছে চলে যান। এখানে নৌকাগুলোর সিরিয়াল আছে একটু দরদাম করে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় ইচ্ছেমত সময়ের জন্য ভাড়া করতে পারবেন।
0 মন্তব্যসমূহ