নবাবগঞ্জ, জমিদারবাড়ি, ঢাকা

 

নবাবগঞ্জ, জমিদারবাড়ি, ঢাকা


 

 ঢাকা  থেকে  মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে ইছামতীর তীরে অবস্থিত ঢাকার এই উপজেলায় যেখানে এখনো রয়েছে নবাবী ছোঁয়া। ইতিহাস আর ঐতিহ্যে টইটুম্বুর এ শহর। প্রায় উনিশ শতক পর্যন্ত এখানে ছিল নবাবদের অস্তিত্ব। ২০০ বছরেরও পুরনো স্থাপত্য নকশার নবাববাড়ির খোঁজ মেলে এখানে। পুরনো স্থাপত্যবিদ্যার প্রতি যাদের আকর্ষণ রয়েছে তাদের জন্য ভ্রমণের এক উপযুক্ত জায়গা হতে পারে নবাবগঞ্জ।

Video link: https://youtu.be/syiMAN_thXQ

 

যাওয়ার উপায়

ঢাকার গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজারের সামনে  দিয়ে দোহারগামী অনেক বাস যায় তবে সব বাস দোহারের মৈনট ঘাট পর্যন্ত যায় না যদি আপনাদের  টার্গেট থাকে একসাথে নবাবগঞ্জের জমিদার বাড়ি   এবং দোহারের মৈনট ঘাট ২ টি স্পট একসাথে ভ্রমণ করাতাহলে আপনারা উঠবেন  যমুনা ডিলাক্স পরিবহন এ। কারন  যমুনা ডিলাক্স পরিবহন এর এই বাসটি  নবাবগঞ্জ হয়ে দোহারের মৈনট ঘাট  পজ্জন্ত যায় এই বাস এ সিট ভাড়া জনপতি ৯৬  টাকা।  প্রায় ১.৫ ঘণ্টার মদ্ধেই আপনি পৌছে  যাবেন নবাবগঞ্জ।বাসে উঠে হেলপারকে বলবেন- জজ বাড়ির সামনে নামিয়ে দিতে।  

 

কি কি দেখবেন ?

 

 

উকিল বাড়ি


 

বাস থেকে নেমেই প্রথমে দেখবেন উকিল বাড়ি ।এই বাড়িটি মূলত হিন্দু জমিদারের ।এই বাড়িটির বর্তমান মালিক  পেশায় একজন উকিল। তাই এর নাম এখন উকিল বাড়ি ।

জজবাড়ি

 

উকিল বারির পাশেই  রয়েছে জজবাড়ি এই বাড়ীর  বর্তমান মালিক পেশায়  একজন জজ তাই এর নামকরন করা হয়েছে জজ বাড়ি ।

ভাঙ্গা মন্দির  

জজ বাড়ি  থেকে একটু সামনে গেলেই  চোখে পরবে কোকিলপ্যারী হাই স্কুল। এই স্কুলের ঠিক অপর পাশেই ধুকতেই চোখে পরবে একটি মঠ এর মঠে রয়েছে একটি ভাঙ্গা মূর্তি । কথিত আছে ১৯৭১ সালে পাক বাহিনী এই মুর্তিটি ভেঙে রেখে গিয়েছিল।এই ভাঙ্গা মূর্তি ইতিহাস আমারও জানা নেই।যদি আপনারা কেউ  জেনে থাকেন তাহলে শেয়ার করবেন।

কোকিলপ্যারী জমিদারবাড়ি

এই মঠের ঠিক সামনেই  রয়েছে আরেকটি জমিদারবাড়ি । ঐ হিন্দু জমিদার তার ৪ ছেলের জন্য ৪ টি ভবন নির্মাণ করেন । এই ভবন গুলোর  মধ্যে এটি একটি । এই ভবনটি  এখন কোকিল প্যারী হাই স্কুলের শিক্ষকদের আবাসিক ভবন হিসেবে ব্যাবহারিত হয় ।

আনসার ক্যাম্প

এই ভবন থেকে কিছুদুর  মাত্র ২-৩ মিনিট হাঁটলেই আপনার চোখে পরবে আনসার ক্যাম্প । এই আনসার ক্যাম্প এর ভিতর কোন ছবি তোলা বা ভিডিও করা সম্পূর্ণ  নিষিদ্ধ ।এই আনসার ক্যাম্পটিতে বেশ কয়েকটি জমিদারবাড়ি রয়েছে  । কিছু কিছু জমিদার বাড়ি এখন সেনাবাহিনীর আবাসিক ভবন হিসেবে ব্যাবহার হয় ।  

আনসার ক্যাম্প পার হলেই আপনাদের চোখে পরবে ইছামতি নদী । কিছুক্ষন এইখানে সময় কাটালে  মন যেন আনন্দে ভরে উঠে

 

ইছামতী নদী

এই ইছামতী নদীর তীর ছিল তৎকালীন সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র। এখন আর সেই বাণিজ্যিক তাৎপর্য না থাকলেও ইছামতীর সৌন্দর্যে কিন্তু একটুও ভাটা পড়েনি। নদীর পাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য এক কথায় অসাধারণ। যত দূর চোখ যায় দেখা যায় সবুজ প্রান্তর।

আদনান প্যালেস


 

ইছামতী নদী ধরে কিছুদূর গেলেই আপনার চোখে পড়বে বেশ কয়েকটি পুরনো বাড়ী । সবগুলো বাড়ী ই প্রায় ২০০ বছরের ইতিহাস বহন করে । কিছুদূর গেলেই চোখে পড়বে আদনান প্যালেস

স্বত্তাধিকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা কে এম আলম পোকরাজ। এই পার্কটির নমা করুন করা হয় তার এমমাত্র সন্তান খন্দকার আদনান এর নামে। পার্কটির নাম আদনান প্যালেস  ছুটির দিনে অনেকেই এই প্যালেস পার্কে তাদের স্বপরিবারে ঘুরতে আশে। সেই কৌতুহলী মনের স্বপ্নপুরনের লক্ষ্যে ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার প্রানকেন্দ্রে কলাকোপায় নৈসর্গিক মনোরম পরিবেশে তৈরি করা হয়েছে অত্যাধুনিক বিনোদন কেন্দ্র প্যালেস পার্ক সব বয়েসি মানুষের কাছেই ইতোমধ্যে প্রিয় হয়ে  উঠেছে। প্যালেস পার্কে রয়েছে শিশুদের মানসিক ও দৈহিক শক্তি গঠনের পাশাপাশি অজানা ও অচেনা বিষয় বস্তুর সঙ্গে পরিচয় ঘটিয়ে জ্ঞানের ভান্ডার করার অপূর্ব সুযোগ।

খেলারাম দাতার বাড়ী

 (আন্ধার কোঠা) :

এটি এক সময় সকলের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। কিন্তু সংস্কার এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এটি এখন প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। এখনো মাটির উপর দুইতলা একটি জড়াজীর্ণ ভবন দেখতে পাবেন। কথিত আছে এই পাঁচতলা ভবনটি এক রাতে তিনতলা পর্যন্ত মাটির নিচে চলে গিয়েছিল। ভবনটির উপরের তলাতে একটি বড় চৌবাচ্চা আছে। কথিত আছে জমিদার খেলারামদা এর মা একদিন তার সন্তানের কাছে দুধ খেতে চাইলে তিনি তার মায়ের জন্য এই চৌবাচ্চা বানানোর নির্দেশ দেন। পরে সেই বিরাট চৌবাচ্চায় দুধ এবং কলা দিয়ে পূর্ণ করে তার মাকে সেই চৌবাচ্চায় নামিয়ে দেন। তার মা সাতার কেঁটে কেঁটে মনের সাধ মিটিয়ে দুধ পান করেছিলেন। এই বাড়িটির পাশেও একটি বিরাট পুকুর আছে। কথিত আছে এই পুকুরের পাশে এসে কেউ কিছু চাইলে তার পর দিন তাই মিলে যেত।

যদি মৈনট ঘাট  যেতে  চান তাহলে জমিদার বাড়ি দেখা শেষে  আপনারা  একটি অটো রিসার্ভ করে রওনা দিবেন  মৈনট ঘাট  এর  উদ্ধেসশে। অটো ভাড়া নিবে  ২০০ টাকা

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ